X

Type keywords like Social Business, Grameen Bank etc.

“বার্সেলোনা সামাজিক ব্যবসা নগরী ও বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব ” পরিদর্শন করলেন ড. ইউনূস

“বার্সেলোনা সামাজিক ব্যবসা নগরী ও বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব ” পরিদর্শন করলেন ড. ইউনূস

Yunus Visits Social Business City of Barcelona & FC Barcelona

নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের আমন্ত্রণে বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব ষ্টেডিয়াম ও যাদুঘর পরিদর্শন করেছেন। ২৬-২৭ জানুয়ারী প্রফেসর ইউনূসের স্পেনের বার্সেলোনায় অবস্থানকালে  বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব তাঁকে তাদের ষ্টেডিয়াম ও যাদুঘর পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানায়। প্রফেসর ইউনূস সেখানে পৌঁছালে ক্লাবের সহ-সভাপতি জর্ডি কার্দোনার ও ক্লাব পরিচালক ডি ডাক লি তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

প্রফেসর ইউনূসকে আমন্ত্রণকারীরা ষ্টেডিয়াম ও বিশেষ করে যাদুঘর ঘুরিয়ে দেখান। তাঁকে পিচের ওপর দিয়ে  হাঁটার আমন্ত্রণ জানানো হয় যা সচরাচর অন্যদের জানান হয়না। পিচে খেলা চলার সময়ে কেমন অনুভূত হয় তা বোঝানোর জন্য তাঁকে ভিআইপি বক্সে নিয়ে যাওয়া হয় যেখান থেকে পুরো মাঠটা দেখা যায়। তাঁর যখনই ইচ্ছা হবে এখানে এসে ভিআইপি বক্স থেকে যে-কোন খেলা দেখার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁকে মিডিয়া গ্যালারীতে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে তিনি মিডিয়ার লোকজন পিচের খেলা কিভাবে দেখে তা উপলদ্ধি পারেন।

বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের অফিসিয়াল টিভি চ্যানেল প্রফেসর ইউনূসের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এরপর তাঁকে ক্লাবের যাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সমৃদ্ধ যাদুঘরটি পুরো ঘুরিয়ে দেখান হয়। আমন্ত্রণকারীরা গত ডিসেম্বরে বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব যে “২০১৫ ওয়ার্ল্ড ক্লাব ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ” ট্রফি জেতে তা বের করে এনে প্রফেসর ইউনূসকে দেখান। তিনি মেসির ৫টি গোল্ড ফুটবলের একটির ছবিও তোলেন। দু’জন বিশ্বখ্যাত ফুটবলার আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি ও ব্রাজিলের নেইমার বর্তমানে বার্সেলোনায় খেলছেন। ক্লাবের সহ-সভাপতি জানান যে, প্রফেসর ইউনূসকে আমন্ত্রণ করতে পেরে তাঁরা সম্মানিত বোধ করছেন এবং ফুটবলের মাধ্যমে মানুষের, বিশেষ করে শিশুদের মুখে কিভাবে হাসি ফোটানো যায় তা তাঁরা প্রফেসর ইউনূসের নিকট থেকে শিখতে চান।

প্রফেসর ইউনূস মেসি, নেইমার, পিকে ও শাকিরাকে বাংলাদেশ সফরের জন্য ও সামাজিক ব্যবসা দিবসে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। সহ-সভাপতি জর্ডি কার্দোনার এই আমন্ত্রণ সংশ্লিষ্টদের কাছে পোঁছে দেবেন বলে জানান। উল্লেখ্য যে, মেসি ও শাকিরা প্রফেসর ইউনূসের সাথে জাতি সংঘ মহাসচিব বান কি মুন কর্র্তৃক গত সপ্তাহে ঘোষিত জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ণ লক্ষ্য বাস্তবায়ন সংক্রান্ত এ্যাডভোকেসী গ্রুপের সদস্য।  সহ-সভাপতি কার্দোনার পৃথিবী ব্যাপী সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য প্রফেসর ইউনূসের সাথে একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস “বার্সেলোনা সামাজিক ব্যবসা নগরী” পরিদর্শনের অংশ হিসেবে বার্সেলোনায় অবস্থানকালে মঙ্গলবার বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব পরিদর্শন করেন। প্রান্তিক সেক্টর ও ব্যবসাকে এগিয়ে নেবার মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে “বার্সেলোনা সামাজিক ব্যবসা নগরী” প্রফেসর ইউনূসেরই একটি উদ্যোগ। এফসি বার্সেলোনা ফাউন্ডেশন এই প্রকল্পের গত সেশনটিতে সহায়তা দেয়।

ক্লাবের সহ-সভাপতি জর্ডি কার্দোনার, ক্লাব পরিচালক ডি ডাক লী এবং এফসি বার্সেলোনা ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক রামন গারিগা প্রফেসর ইউনূসকে ক্যাম্প ন্যু-তে স্বাগত জানান। তাঁরা সমাজের সুবিধা-বঞ্চিত মানুষ ও যুব সমাজের উন্নয়নে তাঁর অসাধারণ কাজের জন্য প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।

বার্সেলোনা সহ-সভাপতি জর্ডি কার্দোনার তাঁর বক্তব্যে বলেন:

প্রফেসর ইউনূসকে এখানে পাওয়াটা একটি সম্মানের বিষয়। মানবতার সেবায় তাঁর অবদান অসামান্য এবং  সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তিনি সবসময়ই প্রতিশ্রুতিশীল। আমাদের মত একটি ক্লাবের ব্যাপারে তিনি যে আগ্রহ দেখিয়েছেন তা আমাদের জন্য গর্বের বিষয় এবং ক্লাবের বাইরেও আমাদের যে গুরুত্ব একজন নোবেল পুরষ্কার জয়ীর নিকট থেকে তার স্বীকৃতি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রফেসর ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন:

এখানে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত রোমাঞ্চিত বোধ করছি। বাংলাদেশে সবাই বার্সার ফ্যান। বাংলাদেশের মানুষ এই ক্লাবটি ও এর খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সবই জানে এবং এদের সম্পর্কে মানুষের আবেগ দেখলে অবাক হতে হয়। এদেশের মানুষের কাছে বিশেষ করে যুব সমাজের কাছে খেলা হচ্ছে একটা স্বপ্ন। বার্সা মানুষকে একত্রিত করে এবং এই শক্তি অন্যদের মঙ্গল করতে পারে, যেমনটি তারা বলে “ক্লাবের চেয়ে বেশী,” এবং এর একটি অপ্রতিরোধ্য সম্ভাবনা রয়েছে।

এই সফরের সময়ে প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোর্শেদ।

বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট  http://goo.gl/zS5pb6 -এ এই সফরটি বিশেষভাবে দেখান হচ্ছে।

ছবি: লামিয়া মোর্শেদ, ইউনূস সেন্টার